বিগ ব্যাং তত্ত্ব নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে। অধিকাংশ কসমোলজিস্টের মতে, আমাদের এই মহাবিশ্ব তৈরি হয়েছে এক বিশাল মহাবিস্ফোরণ দিয়ে, যেটাকে বলে ‘বিগ ব্যাং’। কিন্তু এখন কিছু বিজ্ঞানী বলছেন, এই তত্ত্বটা হয়তো ঠিক নয়। তাঁদের ধারণা, আমরা আসলে একটা বিশাল ব্ল্যাকহোলের ভেতরে বসবাস করছি।
ইংল্যান্ডের ইউনিভার্সিটি অফ পোর্টসমাউথের একদল গবেষক বলেছেন, মহাবিশ্ব কোনো শূন্যতা থেকে হঠাৎ করে তৈরি হয়নি। বরং, একটা অনেক বড় ও ভারী বস্তু চাপে চাপে অনেক ঘন হয়ে হঠাৎ বিস্ফোরিত হয়ে ছড়িয়ে পড়েছে। আর সেখান থেকেই আমাদের মহাবিশ্বের শুরু।
এই তত্ত্বে বলা হচ্ছে, মহাবিশ্বের জন্ম কোনো অসীম ছোট পয়েন্ট থেকে নয়, বরং একটা চরম ঘন অবস্থা থেকে হয়েছে। যেটা একবার ধাক্কা লেগে আবার ছড়িয়ে পড়ে। এর মানে, মহাবিশ্বের প্রসারণ শুরু হয়েছে এক ধরনের ‘বিগ বাউন্স’ থেকে। এতে বিগ ব্যাংয়ের মতো আলাদা করে সিঙ্গুলারিটির ব্যাখ্যা করার দরকার পড়ে না।
গবেষকরা বলছেন, আমাদের এই মহাবিশ্বের চারপাশে এক ধরনের সীমা রয়েছে, যেটা আমরা দেখতে পাই না। সেটাকে বলা হয় ‘ইভেন্ট হরাইজন’। এর বাইরের কিছু আমাদের চোখে পড়ে না, কারণ আলোও ওটা পেরোতে পারে না।
তাঁদের মতে, এই নতুন তত্ত্ব অনেক প্রশ্নের উত্তর দিতে পারে। যেমন, অনেক দূরের গ্যালাক্সিগুলো কেন এত দ্রুত তৈরি হলো, অথবা ব্ল্যাকহোলগুলো এত অল্প সময়ে কীভাবে সৃষ্টি হলো। এই সব রহস্য ব্যাখ্যা করতে এই নতুন ভাবনাটা কাজে লাগতে পারে।
তবে এটা মনে রাখা দরকার, এই "ব্ল্যাকহোল ইউনিভার্স" তত্ত্ব এখনো পুরোপুরি প্রমাণিত নয়। বিজ্ঞানীরা এটাকে একটা নতুন সম্ভাবনা হিসেবে দেখছেন। এ ব্যাপারে আরও গবেষণা দরকার, আরও তথ্য লাগবে। কিন্তু এটা নিঃসন্দেহে খুবই রোমাঞ্চকর এক ধারণা, হয়তো আমাদের মহাবিশ্ব কোনো এক অন্য জগতের ব্ল্যাকহোলের ভেতরে জন্ম নিয়েছে!
তথ্যসূত্র: দি ডেইলি টেলিগ্রাফ।
Comments