কোয়ান্টাম গ্র্যাভিটির খোঁজে


গত শতাব্দীর গোড়ার দিকে বিজ্ঞানের ইতিহাসে দু'টো যুগান্তকারী আবিষ্কারের ঘটনা ঘটেছিলো। এর একটি হলো, আপেক্ষিকতার তত্ত্ব আর অপরটি হলো, কোয়ান্টাম মেকানিক্স। এ দু'টো আবিষ্কারের ফলে প্রাকৃতিক নিয়মাবলী সম্বন্ধে মানুষের সনাতনী ধারনা একেবারেই পাল্টে যায়।  

১৯০৫ সালে আলবার্ট আইনস্টাইন তাঁর আপেক্ষিকতার বিশেষ তত্ত্বে সময়ের সাথে গতির একটি সম্পর্ক তুলে ধরেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, সময়ের গতি ধ্রুব নয়। কোন বস্তুর গতি বৃদ্ধি পেলে তার জন্য সময় শ্লথ হয়ে যায়, আর আলোর গতিতে চললে  সময় একেবারেই থেমে যাবে। শুধু তাই নয়, গতি বৃদ্ধি পেলে বস্তুর ভরও বৃদ্ধি পাবে। আলোর গতিতে চললে কোন বস্তুর ভর হয়ে যাবে অসীম, এবং দৈর্ঘ্য হবে শূন্য। তাঁর এই তত্ত্ব নিঃসন্দেহে ছিল যুগান্তকারী। কিন্তু এর দশ বছর পর, ১৯১৫ সালে এসে তিনি তাঁর আপেক্ষিকতার তত্ত্বকে পূর্ণতা দিলেন, একে নিয়ে গেলেন অনন্য উচ্চতায়। এর নাম হলো, আপেক্ষিকতার সাধারণ তত্ত্ব।   

আইনস্টাইনের আপেক্ষিকতার সাধারণ তত্ত্ব অনুসারে মহাবিশ্বে স্থান (space) এবং কাল (time) একই সূত্রে গাঁথা। যদিও সাদা চোখে আমরা স্থান এবং কালকে আলাদা মনে করি। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে স্থান‌ এবং কালের যৌথ বুননেই মহাবিশ্বের অবকাঠামো গঠিত হয়েছে। বিজ্ঞানীরা এই বুননটির নাম দিয়েছেন স্পেস-টাইম। আইনস্টাইন বলেছেন, বস্তুর উপস্থিতিতে স্পেস-টাইমের বুননের মধ্যে এক ধরনের কার্ভেচার বা বক্রতার সৃষ্টি হয়।‌ একেই আমরা মহাকর্ষ বল হিসেবে দেখি।  

স্পেস-টাইমের বুননকে আমরা একটি রাবারের চাদরের সাথে তুলনা করতে পারি। এই চাদরের উপর আমরা যদি একটি সীসার বল রাখি, তাহলে বলটির ভরের জন্য এর চারপাশে রাবারের চাদরটি বাঁকা হয়ে যাবে। ঠিক তেমনিভাবেই সূর্যের ভরের জন্য তার চারপাশের স্পেস-টাইমের মধ্যে এক ধরনের বক্রতার সৃষ্টি হয়েছে। আর সেটিকে অনুসরণ করেই পৃথিবী সহ অন্যান্য গ্রহ সূর্যকে কেন্দ্র করে প্রদক্ষিণ করছে। ঠিক একইভাবে সূর্যও প্রদক্ষিণ করছে মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সির কেন্দ্রকে ঘিরে। যে বস্তুর ভর যত বেশি হবে তার চারপাশে বক্রতার পরিমাণও তত বেশি হবে। সেজন্যই তার মহাকর্ষ বলও হবে তত বেশি। এভাবেই আইনস্টাইন তাঁর আপেক্ষিকতার সাধারণ তত্ত্বে মহাকর্ষ বলের ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তাঁর মতে মহাকর্ষ বল হলো স্পেস-টাইমেরই একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য। এটি একটি জ্যামিতিক ব্যাপার। আপেক্ষিকতার সাধারণ তত্ত্বকে আইনস্টাইনের মহাকর্ষ তত্ত্ব বলা হয়। এরকম যুগান্তকারী ধারণা আইনস্টাইনের আগে আর কারো মাথায় আসেনি। গ্রহ, নক্ষত্র, গ্যালাক্সি, ব্ল্যাকহোল ইত্যাদি বিভিন্ন মহাজাগতিক বস্তুর গতি-প্রকৃতি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে  আপেক্ষিকতার সাধারণ তত্ত্ব গত একশো বছরে বিভিন্ন পরীক্ষার মাধ্যমে নির্ভুলভাবে প্রমাণিত হয়েছে।  

আগেই বলেছি, আপেক্ষিকতার তত্ত্বের পাশাপাশি বিংশ শতাব্দীর প্রারম্ভে কোয়ান্টাম মেকানিক্সেরও উদ্ভব হয়েছিলো। এর প্রাথমিক ধারণাটির জন্ম দিয়েছিলেন বিজ্ঞানী ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক । আইনস্টাইনের মতো তিনিও  ছিলেন জার্মান। কৃষ্ণবস্তুর বিকিরণের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে তিনি দেখিয়েছিলেন, এই শক্তির বিকিরণটি নিরবচ্ছিন্ন ভাবে হয় না। এটি হয় খন্ডিতভাবে, ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র শক্তির আকারে। যাদের নাম তিনি দিয়েছিলেন "কোয়ান্টা"। তিনি এই শক্তির পরিমাপ নির্ণয় করেছিলেন একটি ধ্রুবকের সাহায্য, যাকে বলা হয়, প্ল্যাঙ্কস কনস্ট্যান্ট। সেখান থেকেই কোয়ান্টাম মেকানিক্সের সূচনা হয়েছিলো। এরপর আইনস্টাইন নিজেও দেখিয়েছিলেন, আলোকরশ্মির ক্ষেত্রেও কোয়ান্টাম মেকানিক্সের নিয়ম কাজ করে। আলোর এই ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র শক্তি কণিকাগুলোর নাম হলো, ফোটন।  কিন্তু একে আমরা দেখি তরঙ্গ হিসেবে। 

পরবর্তীতে কোয়ান্টাম মেকানিক্স নিয়ে প্রচুর গবেষণা হয়েছে।  বস্তুকণাদের ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র জগতের নিয়ামক হলো কোয়ান্টাম মেকানিক্স। বিজ্ঞানীরা দেখেছেন, এই কোয়ান্টাম জগতের নিয়ম-কানুনগুলো বড়ই অদ্ভুত। যেমন একটি বস্তুকণা একই সাথে তরঙ্গ এবং কণা দুই রূপেই থাকতে পারে। সেজন্য নিশ্চিতভাবে একই সাথে বস্তুকণার অবস্থান এবং ভরবেগ নির্ভুলভাবে নির্ণয় করা যায় না।  

গত শতাব্দীতে অনেক মেধাবী বিজ্ঞানী কোয়ান্টাম মেকানিক্স নিয়ে গবেষণা করে এর বিভিন্ন নিয়মাবলী আবিষ্কার করেছেন। এদের মধ্যে ওয়ার্নার হাইজেনবার্গ, আরউন শ্রোডিঙ্গার, নীলস বোর, পল ডিরাক,লুই দ্য ভয়ী, উলফগ্যাং পউলি, এনরিকো ফার্মি, রিচার্ড ফাইনম্যান, প্রমূখ বিজ্ঞানীর নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।  বস্তুকণাদের অতিক্ষুদ্র জগতের গতি-প্রকৃতি ব্যাখ্যা করতে হলে কোয়ান্টাম মেকানিক্সই  বিজ্ঞানীদের একমাত্র ভরসা। এখানে আইনস্টাইনের  আপেক্ষিকতার নিয়মাবলী চলে না। 

বিংশ শতাব্দীর শেষভাগে এসে বিজ্ঞানীরা কোয়ান্টাম মেকানিক্সের উপর ভিত্তি করে বস্তুকণার একটি স্ট্যান্ডার্ড মডেল দিয়েছেন।‌ এই মডেলটি দিয়ে মহাবিশ্বের দৃশ্যমান সকল বস্তুর স্বরূপ ব্যাখ্যা করা যায়। কিন্তু তারপরও সেখানে বড় একটি সমস্যা রয়ে গেছে।  স্ট্যান্ডার্ড মডেলে বস্তুর স্বরূপ উদঘাটনের পাশাপাশি তিনটি প্রাকৃতিক বলের সমন্বয় করা গেলেও, চতুর্থ প্রাকৃতিক বলটির কোনো গ্রহণযোগ্য ব্যাখ্যা দেওয়া যায় না। এই চতুর্থ বলটি হলো মহাকর্ষ বল, যার প্রভাব আমরা আমাদের চারপাশে প্রতিনিয়তই অনুভব করি। এই সর্বব্যাপী বলের প্রভাবেই নিউটনের আপেলটি গাছ থেকে মাটিতে পড়ে ছিল। এই বলের প্রভাবেই মহাবিশ্বের বিভিন্ন গ্রহ, নক্ষত্র, গ্যালাক্সি তাদের নিজ নিজ কক্ষপথে পরিভ্রমণ করছে। এর প্রভাবেই ব্ল্যাকহোলের সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু কোয়ান্টাম মেকানিক্স দিয়ে মহাকর্ষ বলের গ্রহণযোগ্য ব্যাখ্যা দেওয়াটা কঠিন। মহাবিশ্বে সর্বব্যাপী মহাকর্ষ বলের ব্যাখ্যার জন্য আইনস্টাইনের আপেক্ষিকতার সাধারণ তত্ত্বের শরণাপন্ন হতে হয়। 

মোদ্দা কথা হলো, আপেক্ষিকতা এবং কোয়ান্টাম মেকানিক্স দু'টোই স্ব-স্ব ক্ষেত্রে খুবই সফল তত্ত্ব হলেও, তাদের মধ্যে সামঞ্জস্যের অভাব রয়েছে। কিন্তু বিজ্ঞানীরা মনে করেন, মহাবিশ্বের অতি বিশাল এবং অতি ক্ষুদ্র এই দুই জগত দুইটি ভিন্ন নিয়মে চলতে পারে না। তারা মনে করেন, এই দু'য়ের মাঝে নিশ্চয়ই কোনো যোগসূত্র আছে। আর সেটা খুঁজে বের করাটাই হলো কোয়ান্টাম গ্র্যাভিটির মূল প্রতিপাদ্য বিষয়।  

কোয়ান্টাম গ্র্যাভিটি নিয়ে গবেষণার দু'টো প্রধান ধারা রয়েছে। এর একটি হচ্ছে,  স্ট্রিং থিওরি আর অপরটি হলো লুপ কোয়ান্টাম গ্র্যাভিটি, সংক্ষেপে একে বলা হয়, এল কিউ জি (LQG)। এ দু'টো বিষয় নিয়ে সংক্ষেপে এবার একটু আলোচনা করা যাক। ‌ 

স্ট্রিং থিওরি অনুসারে বস্তুর ক্ষুদ্রতম মৌলিক একক কোন কণা নয়, বরং এক ধরনের একমাত্রিক কম্পমান স্ট্রিং। পরমাণুর কেন্দ্রের নিউক্লিয়াসের চেয়েও এরা লক্ষ লক্ষ কোটি কোটি গুণ ছোট।  এদের দৈর্ঘ্য হলো ১.৬ x ১০^-৩৫ মিটার। এই দৈর্ঘ্যকে বলা হয় প্ল্যাঙ্ক লেংথ। গিটারের স্ট্রিংয়ের মতই এই অতিক্ষুদ্র স্ট্রিংগুলোর কম্পনের ফলে এদের ভেতর এক ধরনের  রেজোন্যান্স বা অনুনাদের সৃষ্টি হয়‌। এই অনুনাদের বহিঃপ্রকাশকেই আমরা দেখি বস্তুকণা হিসাবে। স্ট্রিংয়ের কম্পনের তারতম্যের জন্য বস্তুকণার বৈশিষ্ট্যও বিভিন্ন ধরনের হয়। স্ট্রিংয়ের চরিত্র ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বিজ্ঞানীরা উচ্চতর গাণিতিক সমীকরণের সাহায্য নিয়েছেন। এসব সমীকরণে তাঁরা দেখিয়েছেন, মহাবিশ্বে মোট এগারোটি ডাইমেনশন রয়েছে। এসব থিওরিটিক্যাল ডাইমেনশনগুলো এতই সূক্ষ্ম এবং কোঁকড়ানো ও প্যাঁচানো অবস্থায় থাকে যে  দৃশ্যমান বিশ্বে তাদের আমরা দেখতে পাই না। তারা রয়েছে আমাদের সম্পূর্ণ অগোচরে। 

কিন্তু স্ট্রিং থিওরির বিশেষত্ব হলো, এটাই একমাত্র তত্ত্ব যা দিয়ে মহাবিশ্বের সমস্ত বস্তুকণার চরিত্র ব্যাখ্যা করা যায় এবং মহাকর্ষ সহ প্রকৃতিতে বিদ্যমান চারটি মৌলিক বলকে একীভূত করা যায়। স্ট্রিং থিওরিতে একটি কোয়ান্টাম কণার  কথা বলা হয়েছে, যার ভর হলো শুন্য কিন্তু স্পিন হলো দুই, অর্থাৎ ফোটনের দ্বিগুণ। এই ভর শূন্য কণাটির নাম হলো, গ্র্যাভিটন। ফোটনের মতই এটি একটি বল বহনকারী কণা, অর্থাৎ বোসন। স্ট্রিং থিওরি মতে, গ্র্যাভিটন কণাই  হলো মহাকর্ষ বলের উৎস। কিন্তু মনে রাখতে হবে, স্ট্রিং থিওরীর স্বপক্ষে এখনো কোনো পরীক্ষামূলক প্রমাণ নেই। এটি এখনো গাণিতিক সমীকরণের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়েছে। কিন্তু  তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানীরা স্ট্রিং থিওরিকে নিয়ে অত্যন্ত আশাবাদী। তাঁরা আশা করছেন, একদিন অতি উচ্চশক্তির পরমাণু বিধ্বংসী পরীক্ষার মাধ্যমে স্ট্রিং থিওরির সত্যতা প্রমাণিত হবে‌‌।  
অন্যদিকে, কিছু কিছু তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানী আছেন যারা স্ট্রিং থিওরি প্রমাণের আশায় বসে না থেকে অন্যভাবে সমস্যাটির সমাধান করতে চাচ্ছেন। তাদের পছন্দের থিওরি হলো, লুপ কোয়ান্টাম গ্র্যাভিটি  বা এল কিউ জি। এটিও স্ট্রিং থিওরির চেয়ে কম কৌতূহল উদ্দীপক নয়। তবে স্ট্রিং থিওরির সাথে এল কিউ জির একটি মৌলিক পার্থক্য রয়েছে। এটি স্ট্রিং থিওরির মত পটভূমি (background) নির্ভর নয়। আপেক্ষিকতার সাধারণ তত্ত্বের মত পটভূমি ছাড়াই এর ব্যাখ্যা দেওয়া সম্ভব। 

আপেক্ষিকতার সাধারণ তত্ত্বের সমীকরণের উপর ভিত্তি করে আশির দশকের মাঝামাঝি সময়ে ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানী অমিতাভ সেন এবং অভয় আশটেকার এল কিউ জির গাণিতিক মডেলের ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন। এই তত্ত্বে স্থান এবং কালকে একটি কোয়ান্টাম ক্ষেত্র হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে। এই কোয়ান্টাম ক্ষেত্রে স্থান এবং কালের ক্ষুদ্রতম একক রয়েছে। স্থানের ক্ষুদ্রতম দৈর্ঘ্য হলো প্ল্যাঙ্ক লেংথ (১.৬ x ১০^-৩৫ মিটার)। এর নিচে স্থানের কোন অস্তিত্ব নেই। তেমনি কাল বা সময়ের ক্ষুদ্রতম দৈর্ঘ্য হলো প্ল্যাঙ্ক টাইম (১০^-৪৩ সেকেন্ড)। এর কমে সময়ের কোন অস্তিত্ব নেই। এই অতি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র স্থান-কালগুলো লুপ বা ফাঁসের মত পরস্পরের সাথে জড়িয়ে বিস্তৃত নেটওয়ার্ক তৈরি করেছে, একে বলা হয়, স্পিন নেটওয়ার্ক। তারপর এই নেটওয়ার্কগুলো পরস্পরের সাথে  যুক্ত হয়ে তৈরি করেছে স্পিন ফোম। লুপ কোয়ান্টাম গ্র্যাভিটি তত্ত্বে এভাবেই স্থান-কালের কোয়ান্টাম ক্ষেত্র সৃষ্টি হয়েছে।   

স্থান এবং কালের ক্ষুদ্রতম একক কখনোই প্ল্যাঙ্ক লেংথ অথবা প্ল্যাঙ্ক টাইমকে অতিক্রম করতে পারে না। কারণ এটিই হলো স্থান এবং কালের সর্বনিম্ন সীমা। এর নিচে স্থান এবং কালের কোন অস্তিত্ব নেই। মোদ্দা কথা হলো, এভাবেই লুপ কোয়ান্টাম গ্র্যাভিটিতে বিজ্ঞানীরা স্থান-কালের মৌলিক গঠনের একটি গ্রহণযোগ্য ব্যাখ্যা দেয়ার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু স্ট্রিং থিওরির মতো এল কিউ জির স্বপক্ষেও কোন পরীক্ষামূলক প্রমাণ নেই। এটিও গাণিতিক সমীকরণের মধ্যেই এখনো সীমাবদ্ধ রয়েছে। তবে এর প্রবক্তা বিজ্ঞানীরা আশাবাদী। তারা মনে করছেন, মহাশূন্যে স্থাপিত ফার্মি লার্জ এরিয়া টেলিস্কোপ ব্যবহার করে এল কিউ জির সত্যতা প্রমাণ করা সম্ভব হতে পারে। এই টেলিস্কোপ দিয়ে দূরবর্তী নিউট্রন নক্ষত্রের সংঘর্ষের ফলে তৈরি হওয়া শক্তিশালী গামা রশ্মি পরীক্ষা করা হয়। বিজ্ঞানীদের ধারণা, যদি মহাবিশ্বে স্পিন ফোমের মত কোয়ান্টাম ক্ষেত্র সত্যিই থাকে, তাহলে এই গামা রশ্মির বিকিরণে সামান্য পরিবর্তন বা বিচ্যুতি দেখা যেতে পারে। তবে, এখন পর্যন্ত এমন কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

মহাকর্ষ বল হলো মহাবিশ্বের সবচেয়ে দুর্বল এবং দুর্বোধ্য বল। অথচ এর প্রভাব হলো সর্বব্যাপী। ‌নিউটন থেকে শুরু করে আইনস্টাইন সহ আজ পর্যন্ত পৃথিবীর সেরা মেধাবী বিজ্ঞানীরা বিভিন্নভাবে এর ব্যাখ্যা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। সেই চেষ্টা আজও অব্যাহত রয়েছে। 


Comments