সম্প্রতি মঙ্গল গ্রহে সফলভাবে অবতরণ করেছে নাসার মনুষ্যবিহীন রোভার পার্সিভিয়ারেন্স। নাসার বিজ্ঞানী এবং প্রকৌশলীরা আদর করে ডাকেন, পার্সি। এর আগেও, গত পঁচিশ বছরে মঙ্গল গ্রহে নাসা আরো চারটি রোভার পাঠিয়েছিলো। এদের নাম হলো সোজরনার, স্পিরিট, অপরচুনিটি এবং কিউরিওসিটি। এসব রোভারগুলো মঙ্গলপৃষ্ঠে বহু বছর ধরে চরে বেড়িয়েছে। সেখানকার ভুপ্রকৃতির গঠন সম্বন্ধে বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত পৃথিবীতে পাঠিয়েছে। মঙ্গলপৃষ্ঠ থেকে পাঠানো ছবি দেখে বিজ্ঞানীরা বুঝতে পেরেছেন একসময় মঙ্গল গ্রহে তরল পানির অস্তিত্ব ছিল। তবে অতীতে মঙ্গল গ্রহে প্রাণের অস্তিত্ব ছিলো কিনা সে ব্যাপারে এখনো কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। এখানে বলে রাখি,২০১১ সালে পাঠানো কিউরিওসিটি রোভারটি মঙ্গলপৃষ্ঠে এখনো সচল রয়েছে।
আগের রোভার গুলোর তুলনায় নাসার নতুন রোভার পার্সি অনেক বেশি কর্মক্ষম এবং আধুনিক। পার্সির ভেতরে রয়েছে একটি অ্যাস্ট্রোবায়োলজি ল্যাব। এই রোবটিক ল্যাবে মঙ্গল গ্রহের মাটি পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে পরীক্ষা করে দেখা হবে। সেখানে কোন অণুজীবের অস্তিত্ব থাকলে সেটা জানা যাবে। এছাড়াও পার্সি মঙ্গল গ্রহের মাটি এবং প্রস্তরখন্ডের নমুনা সংগ্রহ করবে। এগুলোকে পরবর্তী একটি মিশনের মাধ্যমে পৃথিবীতে ফিরিয়ে এনে আরো ব্যাপকভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হবে।
মজার ব্যাপার হলো, পার্সি রোভারের সাথে সংযুক্ত রয়েছে একটি ছোট্ট হেলিকপ্টার, এর নাম হলো ইনজিনিউটি। এর ওজন মাত্র ১.৮ কিলোগ্রাম। এই হেলিকপ্টারটিকে আর কিছুদিন পরেই মঙ্গলের আকাশে পরীক্ষামূলকভাবে উড়ানো হবে। তখন এটিই হবে পৃথিবীর বাইরে মানুষের উড়ানো সর্বপ্রথম আকাশযান। আশা করা যাচ্ছে, ভবিষ্যতে পার্সিভিয়ারেন্স এবং ইনজিনিউটির মাধ্যমে মঙ্গল গ্রহ সম্বন্ধে আরো অনেক নতুন তথ্য জানা যাবে।
আগামী বছরগুলোতে, মহাকাশ বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি আরো অনেক এগিয়ে যাবে সেটা বলাই বাহুল্য। বিজ্ঞানীরা আশা করছেন, আগামী দশকের মধ্যেই হয়তো মঙ্গলের বুকে মানুষের পদচারনা সম্ভব হবে। এটি হলে মানব ইতিহাসে একটি নতুন যুগের সূচনা হবে। তবে এটাই শেষ নয়, এটা হবে শুরু। এভাবেই একদিন মানুষ সৌরজগতের সীমানা ছাড়িয়ে চলে যাবে দূরে বহুদূরে, অন্য কোনোখানে।
এখানে নাসার আগের রোভারগুলো থেকে পাঠানো মঙ্গল গ্রহের 4K ভিডিও এর লিংক দেওয়া হলো। পুরোটা দেখুন, দয়া করে মিস করবেন না,
https://youtu.be/ZEyAs3NWH4A
Comments