চাঁদটা কেন কমে বাড়ে ?


পৃথিবী যেমন সূর্যকে ঘিরে প্রদক্ষিণ করছে, তেমনি চাঁদও পৃথিবীকে ঘিরে প্রদক্ষিণ করছে। পৃথিবী  সূর্যের একটি গ্রহ, আর চাঁদ হলো পৃথিবীর একমাত্র উপগ্রহ। চাঁদের কোন নিজস্ব আলো নেই। সূর্যের আলো যখন চাঁদের উপর প্রতিফলিত হয়, তখন চন্দ্রপৃষ্ঠের সেই আলোকিত অংশটুকুই আমরা দেখতে পাই।  

এখন প্রশ্ন হলো, চাঁদের আলোকিত অংশটুকু বিভিন্ন সময়ে কম বেশি হয় কেন? অনেকে মনে করেন, পৃথিবীর ছায়া চাঁদের উপর পড়ে সে জন্j এই পরিবর্তন হয়। এটা সম্পূর্ণ ভুল ধারণা।  

আসল কারণ হলো, চাঁদ যখন পৃথিবীকে ঘিরে প্রদক্ষিন করে তখন চন্দ্রপৃষ্ঠের আলোকিত অংশ প্রতি রাতে সমানভাবে দৃশ্যমান হয় না। যখন পুরো আলোকিত অংশ দৃশ্যমান হয় তখন তাকে বলে পূর্ণিমা।  চাঁদ তখন পৃথিবী থেকে সূর্যের বিপরীত দিকে অবস্থান করে। তারপর প্রতিদিনই  চাঁদের সাথে সূর্য এবং পৃথিবীর কৌণিক অবস্থানের পরিবর্তন হতে থাকে। এর ফলে চাঁদের  আলোকিত দৃশ্যমান অংশ ধীরে ধীরে কমতে থাকে। এই সময়কে বলে কৃষ্ণপক্ষ। পূর্ণিমার প্রায় পনেরো দিন পর চাঁদের আলোকিত অংশ সম্পূর্ণ ভাবে দৃষ্টির আড়ালে চলে যায়।  এ সময় চাঁদ অবস্থান করে সূর্য এবং পৃথিবীর মাঝে। এ সময় চাঁদের আলোকিত অংশটি আমাদের দৃষ্টিসীমার সম্পূর্ণ উল্টো দিকে থাকে। ফলে চাঁদ অদৃশ্য হয়ে যায়।একে বলে অমাবস্যা। এরপর থেকে আবার প্রতি রাতে চাঁদের আলোকিত অংশটি আমাদের চোখে দৃশ্যমান হয়ে উঠতে থাকে। একে বলে শুক্লপক্ষ। এ সময় প্রায় ১৫ দিন ধরে চাঁদের  আলোকিত অংশ একটু একটু করে বাড়তে থাকে। যখন পুরো আলোকিত অংশ দৃশ্যমান হয়ে উঠে তখন পূর্ণিমার চাঁদকে আবার দেখা যায়। এভাবেই চন্দ্রকলার ক্ষয় এবং বৃদ্ধি  হয়। পৃথিবীর কক্ষপথে চাঁদের অবস্থান পরিবর্তনের কারণেই এটা হয়। 

মাঝে মাঝে পূর্ণিমার রাতে সূর্য পৃথিবী এবং চাঁদ একই সরলরেখায় চলে আসে। তখন পৃথিবীর ছায়া চাঁদের উপর পড়ে, সেটাকে বলে চন্দ্রগ্রহণ। এটা কিন্তু সব পূর্ণিমার রাতেই হয় না। এর কারণ হলো, পৃথিবী এবং চাঁদের কক্ষপথ একই সমতলে অবস্থিত নয়। দুই কক্ষপথের মাঝে ৫ ডিগ্রি কৌনিক ব্যবধান রয়েছে। পূর্ণিমার সময় চাঁদ যদি এই দুই কক্ষপথের মিলন স্থলে অবস্থান করে তাহলে চন্দ্রগ্রহণ হবে। বছরে সাধারণত দু থেকে তিনবার চন্দ্রগ্রহণ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ২০২৪ সালে তিনবার চন্দ্রগ্রহণ হবে। তবে এর কোনটাই বাংলাদেশ থেকে দেখা যাবে না।

Comments