ইদানিং ফেইসবুক খুললেই একটি ধূমকেতুর ছবি দেখছি। এই ধূমকেতুটি আবিষ্কৃত হয়েছে এ বছরের ৩ জানুয়ারি। গ্রেগ লেনার্ড নামে একজন মার্কিন জ্যোতির্বিজ্ঞানী এই ধূমকেতুটি আবিষ্কার করেছেন। তাঁর নাম অনুসারে, ধূমকেতুটির নামকরণ করা হয়েছে, লেনার্ড কমেট (Leonard comet)।
ধূমকেতুটি এখন সূর্যের বেশ কাছাকাছি চলে এসেছে। এর ফলে ধূমকেতুটির লেজ এখন দৃশ্যমান হয়েছে। ডিসেম্বর মাস থেকে ধূমকেতুটি অস্ট্রেলিয়া সহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে দেখা যাচ্ছে। বাংলাদেশ থেকেও ধূমকেতুটি দেখতে পাবার কথা। ধূমকেতুটি কিন্তু খুব উজ্জ্বল নয়। খালি চোখে আবছা দেখা যায়। স্পষ্ট করে দেখতে হলে বাইনোকুলার বা দূরবীন হলে ভালো হয়। একে দেখতে হলে শহরের বাইরে খুব অন্ধকারাচ্ছন্ন এলাকায় যেতে হবে। সূর্যাস্তের ঘন্টা দুয়েক পর পশ্চিম আকাশে এই ধূমকেতুটি দেখা যাচ্ছে। বিভিন্ন দেশের শখের জ্যোতির্বিদ এবং অ্যাস্ট্রো ফটোগ্রাফাররা ধূমকেতুটির ছবি তোলার জন্য উঠে পড়ে লেগেছেন। সেসব কিছু ছবি এখন ফেইসবুক সহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে দেখা যাচ্ছে।
ধূমকেতু হলো বরফ, ধূলিকণা ও ঘনীভূত গ্যাসের তৈরি এক ধরনের মহাজাগতিক বস্তু। এরা সাইজে খুব বড় নয়। প্রস্থে কয়েক শ মিটার থেকে দশ কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে। তাই খালি চোখে এদের দেখতে পাবার কথা নয়। সাধারণত উপবৃত্তাকার কক্ষপথে এরা সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে। এদের আবর্তন কাল কয়েক বছর থেকে শুরু করে কয়েক হাজার বছর পর্যন্ত হতে পারে।
মজার ব্যাপার হলো, ধূমকেতু যখন সূর্যের খুব কাছে চলে আসে তখন সৌর বায়ু ও বিকিরণের প্রভাবে এর পেছনে একটি দৃশ্যমান গ্যাসীয় লেজ দেখা যায়। কোন কোন ক্ষেত্রে ধূমকেতুর এই লেজটি কয়েকশো কোটি কিলোমিটার পর্যন্ত লম্বা হতে পারে। তখন ধূমকেতুটি খালি চোখে দৃশ্যমান হয়ে ওঠে। কিন্তু ধূমকেতু যতই সূর্য থেকে দূরে সরে যেতে থাকে এর দৃশ্যমান লেজটি ও আস্তে আস্তে বিলীন হয়ে যায়। তখন ধূমকেতুটিকে খালি চোখে আর দেখা যায় না।
ধূমকেতু জগতের সবচেয়ে বিখ্যাত সদস্যের নাম হলো "হ্যালিস কমেট"। নিউটনের গতিবিদ্যার সূত্র ব্যবহার করে ব্রিটিশ জ্যোতির্বিজ্ঞানী এডমন্ড হ্যালি এই ধূমকেতুটির ব্যাপারে ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন। তিনি হিসেব করে বের করেছিলেন ৭৬ বছর পর পর এই ধূমকেতুটি ফিরে আসে। হ্যালির ধূমকেতুকে শেষ বার দেখা গিয়েছিল ১৯৮৬ সালে। তখন গাজীপুরের সালনায় আমাদের পোস্ট গ্রাজুয়েট কলেজের ক্যাম্পাস থেকে রাতের বেলা হ্যালির ধুমকেতু দেখেছিলাম। তবে মনে আছে, সে বছর হ্যালির ধুমকেতুর লেজটি ভালোভাবে দৃশ্যমান হয়নি। সেজন্য অনেকেই মনে দুঃখ পেয়েছিলেন।
কিন্তু আমি আমার খুব ছোটবেলায় ঢাকার আকাশে একটি আশ্চর্য উজ্জ্বল ধূমকেতু দেখেছিলাম। এটি ছিল ১৯৬৫ সালের কথা। আমার বয়স তখন মাত্র ৫ বছর। সে বছর মহাকাশে একটি বিশাল ধূমকেতু দেখা গিয়েছিলো। যার নাম ছিল "ইকেয়া- সেকি" ধূমকেতু। দুজন জাপানি সৌখিন জ্যোতির্বিদের নামে ধূমকেতুটির নামকরণ করা হয়েছিলো। তাঁরা দুজনেই এই ধূমকেতুটি আবিষ্কার করেন।
আমার স্পষ্ট মনে আছে, এই ধূমকেতুটির লেজ এত লম্বা ছিলো, দেখে মনে হতো আকাশে আড়াআড়িভাবে একটা ঝাঁটার মত বস্তু উল্টো হয়ে ঝুলে আছে। সে এক অভূতপূর্ব দৃশ্য। আমার বাল্য স্মৃতিতে এই ধূমকেতুর দৃশ্যটি এখনো অম্লান হয়ে আছে। ইন্টারনেট খুঁজে "ইকেয়া-সেকি" ধূমকেতুর একটি ছবি পেলাম। সেই সাথে বর্তমানের, লেনার্ড ধূমকেতুর একটি ছবি দিলাম। কদিন বাদে শহর থেকে দূরে গিয়ে লেনার্ড ধূমকেতুর ছবি তুলবো বলে আশা করছি। সুযোগ পেলে আপনিও শহরের বাইরে গিয়ে রাতের আকাশে লেনার্ড ধূমকেতুটি দেখতে ভুলবেন না। যতদূর জানি, ধূমকেতুটি জানুয়ারি মাস পর্যন্ত দৃশ্যমান থাকবে। তারপর ধীরে ধীরে মিলিয়ে যাবে দৃষ্টিসীমা থেকে।
ছবি: ধুমকেতু লেনার্ড (বামে)
ধুমকেতু ইকেয়া-সেকি (ডানে)
ধূমকেতুটি এখন সূর্যের বেশ কাছাকাছি চলে এসেছে। এর ফলে ধূমকেতুটির লেজ এখন দৃশ্যমান হয়েছে। ডিসেম্বর মাস থেকে ধূমকেতুটি অস্ট্রেলিয়া সহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে দেখা যাচ্ছে। বাংলাদেশ থেকেও ধূমকেতুটি দেখতে পাবার কথা। ধূমকেতুটি কিন্তু খুব উজ্জ্বল নয়। খালি চোখে আবছা দেখা যায়। স্পষ্ট করে দেখতে হলে বাইনোকুলার বা দূরবীন হলে ভালো হয়। একে দেখতে হলে শহরের বাইরে খুব অন্ধকারাচ্ছন্ন এলাকায় যেতে হবে। সূর্যাস্তের ঘন্টা দুয়েক পর পশ্চিম আকাশে এই ধূমকেতুটি দেখা যাচ্ছে। বিভিন্ন দেশের শখের জ্যোতির্বিদ এবং অ্যাস্ট্রো ফটোগ্রাফাররা ধূমকেতুটির ছবি তোলার জন্য উঠে পড়ে লেগেছেন। সেসব কিছু ছবি এখন ফেইসবুক সহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে দেখা যাচ্ছে।
ধূমকেতু হলো বরফ, ধূলিকণা ও ঘনীভূত গ্যাসের তৈরি এক ধরনের মহাজাগতিক বস্তু। এরা সাইজে খুব বড় নয়। প্রস্থে কয়েক শ মিটার থেকে দশ কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে। তাই খালি চোখে এদের দেখতে পাবার কথা নয়। সাধারণত উপবৃত্তাকার কক্ষপথে এরা সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে। এদের আবর্তন কাল কয়েক বছর থেকে শুরু করে কয়েক হাজার বছর পর্যন্ত হতে পারে।
মজার ব্যাপার হলো, ধূমকেতু যখন সূর্যের খুব কাছে চলে আসে তখন সৌর বায়ু ও বিকিরণের প্রভাবে এর পেছনে একটি দৃশ্যমান গ্যাসীয় লেজ দেখা যায়। কোন কোন ক্ষেত্রে ধূমকেতুর এই লেজটি কয়েকশো কোটি কিলোমিটার পর্যন্ত লম্বা হতে পারে। তখন ধূমকেতুটি খালি চোখে দৃশ্যমান হয়ে ওঠে। কিন্তু ধূমকেতু যতই সূর্য থেকে দূরে সরে যেতে থাকে এর দৃশ্যমান লেজটি ও আস্তে আস্তে বিলীন হয়ে যায়। তখন ধূমকেতুটিকে খালি চোখে আর দেখা যায় না।
ধূমকেতু জগতের সবচেয়ে বিখ্যাত সদস্যের নাম হলো "হ্যালিস কমেট"। নিউটনের গতিবিদ্যার সূত্র ব্যবহার করে ব্রিটিশ জ্যোতির্বিজ্ঞানী এডমন্ড হ্যালি এই ধূমকেতুটির ব্যাপারে ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন। তিনি হিসেব করে বের করেছিলেন ৭৬ বছর পর পর এই ধূমকেতুটি ফিরে আসে। হ্যালির ধূমকেতুকে শেষ বার দেখা গিয়েছিল ১৯৮৬ সালে। তখন গাজীপুরের সালনায় আমাদের পোস্ট গ্রাজুয়েট কলেজের ক্যাম্পাস থেকে রাতের বেলা হ্যালির ধুমকেতু দেখেছিলাম। তবে মনে আছে, সে বছর হ্যালির ধুমকেতুর লেজটি ভালোভাবে দৃশ্যমান হয়নি। সেজন্য অনেকেই মনে দুঃখ পেয়েছিলেন।
কিন্তু আমি আমার খুব ছোটবেলায় ঢাকার আকাশে একটি আশ্চর্য উজ্জ্বল ধূমকেতু দেখেছিলাম। এটি ছিল ১৯৬৫ সালের কথা। আমার বয়স তখন মাত্র ৫ বছর। সে বছর মহাকাশে একটি বিশাল ধূমকেতু দেখা গিয়েছিলো। যার নাম ছিল "ইকেয়া- সেকি" ধূমকেতু। দুজন জাপানি সৌখিন জ্যোতির্বিদের নামে ধূমকেতুটির নামকরণ করা হয়েছিলো। তাঁরা দুজনেই এই ধূমকেতুটি আবিষ্কার করেন।
আমার স্পষ্ট মনে আছে, এই ধূমকেতুটির লেজ এত লম্বা ছিলো, দেখে মনে হতো আকাশে আড়াআড়িভাবে একটা ঝাঁটার মত বস্তু উল্টো হয়ে ঝুলে আছে। সে এক অভূতপূর্ব দৃশ্য। আমার বাল্য স্মৃতিতে এই ধূমকেতুর দৃশ্যটি এখনো অম্লান হয়ে আছে। ইন্টারনেট খুঁজে "ইকেয়া-সেকি" ধূমকেতুর একটি ছবি পেলাম। সেই সাথে বর্তমানের, লেনার্ড ধূমকেতুর একটি ছবি দিলাম। কদিন বাদে শহর থেকে দূরে গিয়ে লেনার্ড ধূমকেতুর ছবি তুলবো বলে আশা করছি। সুযোগ পেলে আপনিও শহরের বাইরে গিয়ে রাতের আকাশে লেনার্ড ধূমকেতুটি দেখতে ভুলবেন না। যতদূর জানি, ধূমকেতুটি জানুয়ারি মাস পর্যন্ত দৃশ্যমান থাকবে। তারপর ধীরে ধীরে মিলিয়ে যাবে দৃষ্টিসীমা থেকে।
ছবি: ধুমকেতু লেনার্ড (বামে)
ধুমকেতু ইকেয়া-সেকি (ডানে)
Comments