পত্র পত্রিকা খুললে প্রায়ই চোখে পড়ে বাসে বাসে সংঘর্ষের খবর। মাঝে মাঝে বাসে ট্রেনে সংঘর্ষ বা ট্রেনে ট্রেনে সংঘর্ষের খবর ও শোনা যায়। অনেকদিন আগে একটি প্লেনের সাথে অন্য একটি প্লেনের মুখোমুখি সংঘর্ষের খবর পড়েছিলাম। আসল কথা হলো, সাবধানে না চালালে যানবাহনের মধ্যে ধাক্কা লাগতেই পারে। কথায় বলে, সাবধানের মার নেই।
কিন্তু মহাকাশে দুটো নভোযানের মধ্যে সংঘর্ষ, সেটাও কি সম্ভব? হ্যাঁ সেটাও সম্ভব। মাস খানেক আগে এরকমই একটি ঘটনা ঘটতে যাচ্ছিল। কিন্তু অল্পের জন্য দুর্ঘটনাটি ঘটে নি। খবরটি প্রকাশ করেছে ভারতীয় মহাকাশ সংস্থা, ইসরো (ISRO)।
ইসরো জানিয়েছে, গত ১৮ অক্টোবর চাঁদকে প্রদক্ষিণরত তাদের চন্দ্রযান- ২ অরবিটার (CH2O) নাসার পাঠানো লুনার রিকনিসেন্স অরবিটারের (LRO) খুব কাছাকাছি চলে এসেছিল। এক পর্যায়ে এ দুই অরবিটারের মধ্যে দূরত্ব এত কমে যায় যে এদের মধ্যে সংঘর্ষ হওয়ার উপক্রম হয়। দুটো মহাকাশযানই সে সময় চাঁদের উত্তর মেরুর উপর দিয়ে প্রদক্ষিণ করছিল। বিপদজনক পরিস্থিতি এড়ানোর জন্য ইসরোর বিজ্ঞানীরা অতি দ্রুত চন্দ্রযান- ২ অরবিটারের গতিপথ কিছুটা পরিবর্তন করে দেন। এ সময় তারা সর্বক্ষণিক ভাবে নাসার সাথে যোগাযোগ রাখছিলেন। এর ফলে দুটো মহাকাশযানই সংঘর্ষের হাত থেকে বেঁচে যায়। ইসরোর বিজ্ঞানীরা আশ্বস্ত করেছেন, ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা নেই।
মহাকাশযানের গতিপথ অতি দ্রুত পরিবর্তন করার পদ্ধতিকে বলে কলিশন এভয়ডেন্স ম্যানুভার (CAM), বা দুর্ঘটনা এড়ানোর কৌশল। মহাকাশযানে থাকা ছোট রকেট ইঞ্জিন থেকে হালকা থ্রাস্ট বা ধাক্কা দিয়ে এই গতিপথ পরিবর্তন করা হয়। মহাকাশ যানের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করেই এই ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। পৃথিবীকে প্রদক্ষিণরত বিভিন্ন কৃত্রিম উপগ্রহেও এই ব্যবস্থা রয়েছে। এর ফলে উপগ্রহগুলো মহাকাশে সম্ভাব্য সংঘর্ষের হাত থেকে নিজেদেরকে রক্ষা করতে পারে। মহাকাশে নভোযানের সংখ্যা বাড়ার সাথে সাথে তাদের মধ্যে সংঘর্ষের সম্ভাবনাও বেড়ে যাচ্ছে। সে জন্য আগে ভাগেই সংঘর্ষ এড়ানোর জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
বিস্তারিত তথ্যের জন্য
https://www.indiatoday.in/amp/science/story/a-close-shave-isro-saves-chandrayaan-2-from-colliding-with-nasa-s-lunar-reconnaissance-orbiter-1877498-2021-11-16
Comments