পিতা ও পুত্র

১৮৯৭ সালে ব্রিটিশ পদার্থ বিজ্ঞানী  জোসেফ জন থম্পসন একটি যুগান্তকারী পরীক্ষার মাধ্যমে ইলেকট্রন কণা আবিষ্কার করেছিলেন।  ইলেকট্রন হলো সর্বপ্রথম আবিষ্কৃত পারমাণবিক বস্তুকণা। ‌ তাঁর এই আবিষ্কারটি পদার্থবিজ্ঞানে একটি নতুন যুগের সূচনা করেছিলো। ইলেকট্রন কণা আবিষ্কারের জন্য ১৯০৬ সালে তিনি পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন। ‌ বিজ্ঞানী মহলে তাঁর ব্যাপক পরিচিতি ছিল স্যার জে জে থম্পসন নামে।

তাঁর পরবর্তী প্রজন্মের বিজ্ঞানীরা বস্তুকণাদের চরিত্র নিয়ে গবেষণা করতে গিয়ে কোয়ান্টাম মেকানিক্সের আশ্রয় নিয়েছেন। ইলেকট্রনের গতি প্রকৃতি নিয়ে গবেষণায় কোয়ান্টাম মেকানিক্সের সূত্র প্রয়োগ করে তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানীরা বুঝতে পেরেছিলেন ইলেকট্রন শুধুমাত্র নিছক একটি কণাই নয়, এটি এক ধরনের তরঙ্গও বটে।‌ ইলেকট্রন একই সাথে কণা এবং তরঙ্গ দুই রূপেই থাকতে পারে।

ইলেকট্রন কণা আবিষ্কারের প্রায় চল্লিশ বছর পর পরীক্ষার মাধ্যমে ইলেকট্রনের  তরঙ্গ রূপকে
প্রমাণ করেছিলেন দুইজন ব্রিটিশ পদার্থবিজ্ঞানী। তাঁদের নাম হলো,  জর্জ  থম্পসন এবং ক্লিনটন ডেভিসনএই যুগান্তকারী আবিষ্কারটির জন্য তাঁরা  যৌথভাবে ১৯৩৭ সালে পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন।
মজার ব্যাপার হলো এদের মধ্যে  জর্জ থম্পসন ছিলেন স্যার জে জে থম্পসনের সুযোগ্য পুত্র। ইলেকট্রনকে ঘিরে পিতা এবং পুত্র উভয়ের পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার প্রাপ্তি নিঃসন্দেহে একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা। ‌ পিতার আবিষ্কার ছিলো ইলেকট্রন হলো  বস্তুকণা আর পুত্র প্রমাণ করলেন ইলেকট্রন হলো তরঙ্গ। ‌কোয়ান্টাম মেকানিক্সের বিচিত্র জগতে পিতা এবং পুত্র দুজনের সিদ্ধান্তই সঠিক বলে বিবেচিত। 

Comments