হোয়াইট হোল

হোয়াইট হোলকে মনে করা হয়, ব্ল্যাকহোলের থিওরিটিক্যাল টুইন
কিন্তু এর চরিত্র ব্ল্যাকহোলের সম্পূর্ণ বিপরীত। আমরা জানি ব্ল্যাকহোল তার চারপাশে সমস্ত বস্তুকে  গ্রাস নেয়‌। এমনকি আলোকরশ্মিও ব্ল্যাকহোলের ভেতর থেকে বের হতে পারে না। বিজ্ঞানীরা বলেছেন, প্রবল মহাকর্ষ বলের প্রভাবে ব্ল্যাকহোলের অভ্যন্তরে স্থান-কালের  বক্রতাটি অসীম আকার ধারণ করেছে। এর নাম তাঁরা দিয়েছেন, সিঙ্গুলারিটি। এখানে এসে স্থান এবং কাল একাকার হয়ে গেছে। সময় গেছে থেমে। পদার্থ বিজ্ঞানের স্বাভাবিক নিয়মগুলিও এখানে খাটে না। সেজন্য ব্ল্যাকহোলের অভ্যন্তরে কি ঘটছে সেটা নিশ্চিত করা বলা কঠিন।

অনেক বিজ্ঞানী মনে করেন, হোয়াইট হোল হচ্ছে ব্ল্যাকহোলের অন্তিম দশা। হোয়াইট হোল তার ভেতরে কোন বস্তুকে প্রবেশ করতে দেয় না, সবকিছুকে  উগরে দেয়।  ইতালিয়ান তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানী কার্লো রোভেলি মনে করেন মহাবিশ্বে হোয়াইট হোলের অস্তিত্ব রয়েছে। তার ধারণা কোন সংকুচিত নক্ষত্র যখন ব্ল্যাকহোলে পরিণত হয়ে ‌ সিঙ্গুলারিটির শেষ সীমায় পৌঁছে যায় তখন কোয়ান্টাম অনিশ্চয়তার জন্য ব্ল্যাকহোলটি সময়ের বিপরীতে "বাউন্স ব্যাক" করতে পারে। ব্ল্যাকহোলটি তখন তার ভেতরের সমস্ত শক্তি বাইরে  বের করে দিয়ে একটি হোয়াইট হোলে পরিণত হয়। 

কার্লো রোভেলি "হোয়াইট হোল" নামে একটি জনপ্রিয় বিজ্ঞানের বই লিখেছেন। এই বইটিতে রোভেলি পাঠককে নিয়ে যাবেন হোয়াইট হোলের অভ্যন্তরের এক বিস্ময়কর জগতে। পুরো ব্যাপারটিকে বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী মনে হতে পারে।  কিন্তু এর পেছনে  তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানের সুনির্দিষ্ট কিছু ভিত্তি রয়েছে।  রোভেলি সেটাই তুলে ধরেছেন পাঠকের কাছে তার স্বভাবসুলভ প্রাঞ্জল ভাষায়। বইটি এখন প্রিন্ট এবং অডিও ফরম্যাটে পাওয়া যাচ্ছে।

প্রসঙ্গত বলে রাখি, থিওরিটিক্যালি সম্ভব হলেও বাস্তবে কোথাও এখনো হোয়াইট হোলের সন্ধান পাওয়া যায়নি।



Comments